দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঠিক ১১৯ দিনের মাথায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে শেষ ধাপের ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। তফসিল ঘোষণার পর থেকেই রায়গঞ্জ উপজেলাজুড়ে বিরাজ করেছে ভোটের আমেজ। উৎসবমুখর পরিবেশে চলছে প্রার্থীদের প্রচার প্রচারণা। জাতীয় সংসদ নির্বাচন উৎসবে যেমন সব শ্রেণিপেশার মানুষ একযোগে অংশ নিয়ে ছিল তেমনই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটের মাঠেও যোগ দিয়েছে সব বয়সের সব শ্রেণি পেশার মানুষ। প্রার্থী ও তাদের কর্মীসমর্থকরা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ছুটছেন ভোট প্রার্থনার জন্য। গণসংযোগ থেকে শুরু করে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চাচ্ছেন তারা। নিয়মিত চলছে পথসভা-উঠান বৈঠক এবং দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতিও। স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা খেলার মাঠে বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে দিয়ে যাচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি। শুধু মাঠে ময়দানেই নয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক হোয়াটসআপ ইউটিউবসহ নানা মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে ভোটের প্রচারণা।
তফসীল ঘোষণা হওয়ার আগ থেকেই নির্বাচনী প্রচারণায় মাঠে নেমে পড়েছেন রায়গঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থীরা। আগামী ৫ জুন অনুষ্ঠিত নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন চার হেভিওয়েট আওয়ামী লীগ নেতা। জনগণকে নানা প্রতিশ্রুতি উন্নয়নের বহুমুখী বার্তা দিয়ে মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন রায়গঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের বারবার নির্বাচিত সভাপতি জনাব আব্দুল হাদী আলমাজ্বী জিন্নাহ, ঘোড়া মার্কা নিয়ে মাঠে নেমেছেন সাবেক শীর্ষ ছাত্রনেতা ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি রায়গঞ্জ উপজেলা মানবাধিকার কমিশনের সভাপতি গোলাম হোসেন শোভন সরকার। আর দোয়াতকলম মার্কা নিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এমপিপুত্র ইমরুল হোসেন ইমন তালুকদার এবং আনারস প্রতীক নিয়ে নির্বাচনী মাঠে নেমেছেন সাবেক ভিপি আমিনুল ইসলাম শিহাব তবে গেল ২৫ মে লিখিত পরিপত্রের মাধ্যমে নির্বাচন থেকে সরে দাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন ভিপি আমিনুল ইসলাম শিহাব। তবে হঠাৎই কেন এভাবে নির্বাচন থেকে সরে দাড়ানো বিষয়টি নৈতিবাচক হিসাবে দেখছে কর্মী সমর্থকরা এবং জনমনে দোল খাচ্ছে নানা প্রশ্ন। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সুশীল সমাজের জনপ্রতিনিধিরা মনে করছেন এটা সমঝোতা বা ব্যর্থতাকে ডাকতেই এমন সিদ্দান্ত নিয়েছেন তিনি।

এদিকে সংঘাতবিহীন উৎসবমুখরভাবে শক্তিশালী তিন চেয়ারম্যান প্রার্থীর চলছে বর্ণিল নির্বাচনী প্রচারণা।

প্রতীক বরাদ্দের পরপরই আরো তীব্রভাবে নির্বাচনী প্রচারে নেমে পড়েছেন প্রার্থীরা। শুরু করেছেন জনসংযোগ। নিজ নিজ প্রতীকের পোস্টার টানানোর পাশাপাশি মাইকেও চলছে প্রচার-প্রচারণা। প্রার্থীরা ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণে নিচ্ছেন নানামুখী পদক্ষেপ। গ্রাম থেকে হাট-বাজার এমনকি পাড়া মহল্লার হোটেল রেস্তোরায় চলছে প্রার্থীদের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা। প্রার্থীদের অতীত বর্তমান নিয়ে করে যাচ্ছেন চুলচেরা বিশ্লেষণ। এ বছর রায়গঞ্জ উপজেলা নির্বাচনে হেভিওয়েটের ৩ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদের মধ্যে তিনজনই আওয়ামী লীগ নেতা। যেহেতু দল থেকে কাউকে মনোনয়ন বা দলীয় প্রতীক দেয়া হয়নি তাই সকলেই স্বতন্ত্র হয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন।প্রতীক পাওয়ার পর থেকেই নির্বাচনী মাঠে সরব সবাই। প্রতীক পেয়েই বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এমপিপুত্র ইমরুল হোসেন ইমন তালুকদার (দোয়াতকলম ) নিজেকে আবারো উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে তার কর্তৃত্ব ধরে রাখতে উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে নির্বাচনী জনসভা ও মতবিনিময় সভা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তবে এবার ইমরুল হোসেন ইমন তালুকদারের নির্বাচনী প্রচারণা একটু ভিন্ন আংগিকে সাজিয়েছে। প্রচারণার খুব তোরজোড় না থাকলেও নিজ এলাকা বাক্সবন্ধি করতে নিজ এলাকাকে গুছিয়ে নিতে দৃপ্ত পায়ে হেটে চলেছেন তিনি। অনেকটা খন্ডব্রিজ পার না হয়ে লং সেতুতে প্রবেশের মত। একাধিক রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন ইমরুল হোসেন ইমন তালুকদার রাজনৈতিক পরিবারে বেড়ে ওঠায় রাজনৈতিক গতিবিধি, ভোটারকে বশিকরণ, ভোট ম্যাপ, দুরদর্শি নির্বাচনী জ্ঞান থাকায় এবারের নির্বাচনে শেষ দিনগুলোতে নতুন চমক অভিভূত হবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

অপরদিকে আসন্ন নির্বাচনে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাদি আলমাজ্বী জিন্নাহ(মোটরসাইকেল) প্রতীকনিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে মাঠ-ময়দানে চষে বেড়াচ্ছেন। দিনরাত ভোটারদের কাছে গিয়ে নিজের জন্য ভোট চাচ্ছেন। রায়গঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি একজন সফল পঞ্চায়েত ব্যক্তিত্ব হিসেবে উপজেলাজুড়ে তার যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকাকে বিজয়ী করতে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। বিগত দিনের কর্মকাণ্ড মূল্যায়ন করলে এই নির্বাচনে তার বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি বলে জানিয়েছেন ভোটাররা। এ ছাড়াও সাধারণ জনগণ জানান একজন ত্যাগী রাজনীতিবিদ হিসেবে তাকে এবার শেষমেশ সুযোগটা দেয়াটা দরকার বলে মত প্রকাশ করেন তারা। এদিকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন একজন প্রবীন রাজনীতিবীদ হিসাবে আব্দুল হাদি আলমাজ্বী জিন্নার রাজনৈতিক জ্ঞানের পরিধি অতল সাগরের মত। তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা দুরদর্শিতা এবং বিভিন্ন নির্বাচনের জয়পরাজয়ের অভিজ্ঞতা থাকায় তিনিও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে একটি শক্ত ফলাফল দাড় করাবেন। তাই মৌমাছি না খুজে রানীকে খোজার ব্যস্ততায় ব্যস্তসময় পার করছেন তিনি। শুধু তাই নয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেন আব্দুল হাদি আলমাজ্বী জিন্নাহ এমন এক দুরদর্শি ক্ষমতার নেতা যিনি মানুষের চোখ দেখেই বুঝতে পারেন কে কি চায়। আর তাছাড়া মানুষকে আকৃষ্ট করার প্রবল ক্ষমতা আছে তার। অভ্যন্তরীণ শক্তিবলে জনগণকে নিমিষেই কাছে টানার অপরেশীম ক্ষমতায় দিন যত এগিয়ে যাবে তত মোটরসাইকেলের পাল্লা ভারি হবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক নেতাকর্মীসহ রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

অপরদিকে মানুষের ভালবাসায় শীর্ষ স্থানে অবস্থান করছেন ঘোড়া মার্কার প্রার্থী সাবেক ছাত্রনেতা গোলাম হোসেন শোভন সরকার। ইতিমধ্যেই ছোট বড় আবাল বৃদ্ধ সকলের জনপ্রিয় জননন্দিত নেতায় পরিনত হয়েছেন তিনি। স্মার্ট তরুন নেতা হিসাবে তিনি যে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন তা রায়গঞ্জের জন্য মাইলফলক। সুশীল সমাজের জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ জনগন বলছে বিপুল ভোটে বিজয়ী হবেন গোলাম হোসেন শোভন সরকার।

রায়গঞ্জ উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও ১ টি পৌরসভার হাট বাজার ও বিভিন্ন ওয়ার্ডে একাধিক সাধারণ লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, গোলাম হোসেন শোভন সরকারকে উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে দেখতে চায় জনগণ ।

শোভন সরকার উপজেলা ইট ভাটা মালিক সমিতির সভাপতি, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, সৎ ‌নিষ্ঠাবান,সর্বোচ্চ দানবীর ও মেহনতী মানুষের আস্থাভাজন।
অনেক বাঁধা ও প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে দানবীর ব‍্যাক্তি হিসেবে ইতিমধ্যে উপজেলার সাধারণ মানুষের কাছে জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছেন। সাধারণ মানুষের আপদে বিপদে সব সময় পাশে থাকেন তিনি। সাধারণ জনগণের সাথে উঠা বসা তাঁর যেন একটা স্বভাবজাত নেশা ।
তিনি বিগত নির্বাচনে বিজয়ী না হতে পারলেও কখনো দূর্নীতিকে প্রশ্রয় দেন নাই। তাই উপজেলার ভোটাররা শোভন সরকারকে ভোট প্রদান করে বিজয়ের মালা পরাতে চান। কেউ কখনো অনিয়ম করলে তিনি প্রতিবাদ করেন, সব সময় তৃনমুল পর্যায়ে অস্বচ্ছল নিন্মবিত্ত মেহনতী মানুষদের পক্ষে কথা বলেন ।

রায়গঞ্জ উপজেলার শাখার সাবেক সভাপতি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ শোভন সরকার ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন। এক সময়ের তুখোড় ছাত্রনেতাও ছিলেন।

তিনি রাজনৈতিক জীবনে যেমন সফল ঠিক তেমনি মানুষের কল্যাণে কাজ করার মাধ্যমে উপজেলার সকল শ্রেণি পেশার মানুষের ভালবাসায় তিনি আজ সফল একজন মানুষ এবং স্মার্ট একজন উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী ।
তাই এবার সাধারণ ভোটারগন শোভন সরকার এর পক্ষে। সাধারণ ভোটারদের মাঝে পথে-ঘাটে প্রান্তরে হাটবাজারে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। তিনি বিভিন্ন ইউনিয়নে নির্বাচনী প্রচারণার সময় বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ হাততালি দিয়ে তাদের সমর্থন জানান।

অটো চালক কেরামত ও চড়পাড়ার সুমন জানান, তিনি আমাদের মত গরীব অসহায় মানুষের দুঃখ বোঝেন। বিপদে আপদে সব সময় পাশে থাকেন। এবার আমরা তাকে উপজেলার চেয়ারম্যান হিসেবে দেখতে চাই।
এদিকে চেয়ারম্যান প্রার্থী গোলাম হোসেন শোভন সরকার বিভিন্ন গণ সংযোগে বলেন, আগামী ৫ জুন ঘোড়া মার্কায় ভোট ও সমর্থন চেয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত করার আহবান জানান।

গরিব দুখী মেহনতী মানুষের নেতা যিনি রায়গঞ্জ ছাএলীগ কে সুসংগঠিত করে ছাএসমাজের আইকন হয়েছেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একজন কর্মী হয়ে রায়গঞ্জের মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।
দলীয় তৃনমুল পর্যায়ের নেতা-কর্মী অধিকাংশ ভোটাররা তাকেই চেয়ারম্যান হিসেবে দেখতে চান। তাদের দাবী আওয়ামীলীগ সরকারের হাতকে শক্তিশালী রাখা সহ সর্বদা তৃনমুল পর্যায়ের নেতাদের খোজ খবর নিতে শোভন সরকারের বিকল্প কেহ নেই। তাই নান্দনিক স্মার্ট উপজেলা গড়তে শোভন সরকার ভরসা এখানকার মানুষের।

উপজেলার মোট ৯টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার স্থানীয় ভোটারদের মতে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে গোলাম হোসেন শোভন সরকার বিপুল ভোটে বিজয়ি হবেন।